চাঁদের কত তারিখে শবে বরাত ২০২৫
শবে বরাত, যা ফারসি ভাষায় “শব” অর্থ রাত এবং “বরাত” অর্থ মুক্তি বা নাজাত, ইসলামী ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪তম দিবাগত রাতে পালিত হয়। এই রাতটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা প্রার্থনার একটি মহিমান্বিত সময় হিসেবে বিবেচিত হয়।
শবে বরাতের তারিখ নির্ধারণ:
ইসলামী ক্যালেন্ডার চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে হওয়ায়, শবে বরাতের সঠিক তারিখ প্রতি বছর পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি শাবান মাসের চাঁদ দেখার পর শবে বরাতের তারিখ ঘোষণা করে। সাধারণত, শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হয় এবং সেই অনুযায়ী ১৪তম দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হয়।
২০২৫ সালে শবে বরাত:
২০২৫ সালে, বাংলাদেশের আকাশে ১ ফেব্রুয়ারি শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হয়। এই অনুযায়ী, ১৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হবে। পরের দিন, ১৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার, সরকারি ছুটি থাকবে।
শবে বরাতের ফজিলত:
হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করেন। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। সেই রাতে তিনি মুশরিক এবং অন্য ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।”
ইবাদত ও আমল:
শবে বরাতের রাতে মুসলিমরা নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া এবং অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করেন। এছাড়া, মৃত আত্মীয়-স্বজনের মাগফিরাত কামনা, কবর জিয়ারত এবং সাদাকা প্রদানও এই রাতের আমলের অন্তর্ভুক্ত।
সতর্কতা:
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে কিছু জাল বা দুর্বল হাদিস প্রচলিত আছে। তাই, এই রাতের ইবাদত ও আমল সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। ইবাদতের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি বা নতুন প্রথা অনুসরণ থেকে বিরত থাকা উচিত।
শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের সুযোগ প্রদান করে। সঠিক তারিখ নির্ধারণের জন্য চাঁদ দেখা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন বা স্থানীয় চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণার প্রতি নজর রাখা উচিত। ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে এই রাতের ফজিলত অর্জন করা সম্ভব।
Post Comment